| |
               

মূল পাতা রাজনীতি ইসলামী দল শিক্ষা কমিশনে আলেম  প্রতিনিধি অন্তর্ভূক্ত করতে হবে :মাওলানা মামুনুল হক


শিক্ষা কমিশনে আলেম  প্রতিনিধি অন্তর্ভূক্ত করতে হবে :মাওলানা মামুনুল হক


রহমত নিউজ     26 September, 2024     07:38 PM    


বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, শিক্ষা কমিশন গঠন করে এদেশে সমকামীতা আমদানী করার পায়তারা করা হচ্ছে।এভাবে ইসলামের শাশ্বত বিধানকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে নতুন করে পাশ্চাত্যের অসভ্য সমাজ ব্যবস্থা এবং কিছু কিছু এনজিওদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য সরকারের ভিতর থেকে একটি মহল কাজ করছে।

তিনি বলেন, আমরা পরিস্কার ভাষায় বলি, কুরআন সুন্নাহ বিরোধী যে সকল আইন বিগত সরকারগুলো করেছে সেগুলো সংশোধন করুন। নতুন করে যদি কোনো ধারায় কুরআন সুন্নাহ বিরোধী কোনো আইন সংযুক্ত করার চেষ্টা করা হয়। তবে আবারো শাপলা চত্ত্বরের পরিবেশ কায়েম হবে। শিক্ষা কমিশনে যারা সমকামীতার প্রমোটকারী তাদেরকে বাদ দিন এবং ৯০ ভাগ মুসলমানদের প্রতিনিধিত্বকারী ইসলামী শিক্ষাবিদ ও আলেম উলামাদের প্রতিনিধি অন্তর্ভূক্ত করুন। 

আজ বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর)  বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ময়মনসিংহ, জামালপুর ও  শেরপুর জেলার উদ্যোগে আয়োজিত পৃথক পৃথক গণ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মাওলানা মামুনুল হক বলেন, আমরা ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছিলাম। শেখ হাসিনার বিগত ১৬ বছরে সবচেয়ে বেশি রক্ত দিয়েছে এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা, রক্ত দিয়েছে দেশপ্রেমিক তাওহিদী জনতা, রক্ত দিয়েছে আল্লামা সাঈদী, আল্লামা আহমদ শফী, আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর অনুসারীরা, রক্ত দিয়েছি আমরা, ফাঁসির কাষ্টে জুলেছে আলেম সমাজ, রক্ত দিয়েছে ইসলামী নেতৃবৃন্দ। বছরের পর বছর কারাগারে থেকেছে আলেম সমাজ। এরপরই ৫ আগস্টের বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে। সুতরাং ৭১ সালের পর বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিজয়কে যেভাবে ছিনতাই করে ৭২ সালের চেতনাকে দাঁড় করিয়ে একটি গণঅভিপ্রায় ভিনদেশী সংবিধানকে বাংলাদেশের মানুষের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিলো। আজও  ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট তাওহিদী জনতার এ বিপ্লবকে  ছিনতাই করার আয়োজন চলছে।  ‍

তিনি বলেন, আমরা পরিস্কার করে বলতে চাই। ফ্যাসিবাদ হঠানোর সংগ্রামের প্রতিটি অংশে আমরা ছিলাম। আমরা ছিলাম দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য, ইসলামের জন্য। সুতরাং দেশ ও দেশের মানুষ এবং ইসলামের স্বার্থ বিরোধী কারো সাথে আমাদের আপস নেই। দেশ ও দেশের জাতিসত্তা বিরোধী কোনো কিছু আমরা বরদাশত করবো না। ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়ন হতে দিবো না। তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্যেশ্যে বলেন, আপনাদের দুর্বলতার সুযোগ আমরা নিতে চাই না। আপনারা দুর্বল সরকার। আমাদের সম্মিলিত সংগ্রামের ফসল আপনারা। আমরা চাই না আবার ফ্যাসিবাদ আসুক। আপনাদের কার্যক্রমকে ব্যর্থ করে দিক। এজন্য আমরা শেষ পর্যন্ত ধৈর্য ধরতেছি। তবে আমাদের ধৈর্য্যধরাকে যদি দুর্বলতা ভাবেন তাহলে বোকামি করবেন।

তিনি আরও বলেন, যে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিলো ইনশাআল্লাহ এর উপর অর্থাৎ আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের শক্তির উপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস রেখেই মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিলো। মুক্তিযুদ্ধের কমিটমেন্ট ও অঙ্গীকার ছিলো নির্বাচনে বিজয় হলে দেশে কুরআন সুন্নাহ বিরোধী কোনো আইন প্রণয়ন করা হবে না। এ অঙ্গিকার করে ১৯৭০ সালে জনগণ থেকে ম্যান্ডেট নেওয়া হয়েছিলো। ৭০ এর নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ যাদেরকে ভোট দিয়েছিলো তাদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার কারণে ৭১ এর ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ করেছিলো। যে দেশের স্বাধীনতা আল্লাহর উপর আস্থা বিশ্বাস এবং কুরআন সুন্নাহ বিরোধী আইন না করার অঙ্গিকারের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়। কয়েক মাসের মধ্যে সে দেশের মানুষের চিন্তা চেতনা ঐতিহ্য ও অভিপ্রায়কে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে আরেকটি রাষ্ট্রের সংবিধানের মুলনীতিগুলোকে জোর করে এদেশের মানুষের উপর চাপিয়ে দিয়ে ভিনদেশী পেসক্রিপশনে সংবিধান রচনা করা হয়। ৭১-এর চেতনাকে জবাই করে ৭২-এর চেতনাকে ৭১ বলে বাংলাদেশের মানুষের উপর ছাপিয়ে দিয়েছিলো। মানুষ যখন ৭২ এর চেতনাকে অস্বীকার করেছে তখনই স্বৈরাচার হাসিনা আমার দেশের ছাত্রজনতাকে রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দিয়েছিলো। শেখ হাসিনা তার পেটুয়া বহিনী ছাত্রলীগ, যুবলীগ হাতুড়িলীগ দিয়ে ছাত্রজনতার উপর ঝাপিয়ে পড়েছিলো। ছাত্রজনতাকে রক্তাক্ত করা হয়েছিলো।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আরও বলেন, ভারতে আমার নবী সা.কে নিয়ে জগন্যতম কুটক্তি করা হয়েছে। সেদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেটাকে প্রমোট করেছে এবং আল্লাহর নবীর ইজ্জতের বিরুদ্ধে যে কথা বলেছে তাকে সমর্থন করে বক্তব্য দিয়েছে। আমার নবী বিশ্ব মানবতার নবী। নবীর ইজ্জত রক্ষার প্রশ্নে আমরা কাহারো চেহারার দিকে তাকিয়ে কথা বলবো না। বর্তমান সরকারকে বলবো ভারতের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে তাদের সতর্ক করুন। যদি তারা পদক্ষেপ গ্রহণ না করে। তাহলে সরকারের পক্ষ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, পরিপূর্ণ বৈষম্যহীন ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ গড়া একমাত্র আল্লাহ প্রদত্ত জীবন ব্যবস্থার মাধ্যমেই সম্ভব। তাই মানব রচিত তন্ত্র-মন্ত্র বাদ দিয়ে আল্লাহ প্রদত্ত রাজনৈতিক ব্যবস্থা খেলাফতের দিকে সকলকে দাওয়াত দিচ্ছি।

সকালে জামালপুর শহরের হাই স্কুল মাঠে সংগঠনের জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ আলীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, সহ-বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান। তারপর দুপুরে শেরপুরের পৌর মাঠে গণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। 

বিকেলে ময়মনসিংহের আঞ্জুমান ঈদগাহে কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও জেলা সভাপতি মুফতী হাবীবুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী সহ-বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান প্রমুখ।